Find the Latest Status about dubdi monastery distance from gangtok from top creators only on Nojoto App. Also find trending photos & videos about, dubdi monastery distance from gangtok.
Pathik Majumder
গ্যাংটক এ গণ্ডগোল এবার পুজোয় মহারাজ এর বাবা বললেন যে এবার তারা সিকিম বেড়াতে যাবেন। মহারাজ এই কথা শুনে আনন্দে নাচ করতে শুরু করে দিল। কিন্তু মা বললেন যে পরীক্ষার ফল যদি ভালো না হয় তাহলে বেড়াতে যাওয়া হবে না। এই কথা শুনে মহারাজ একটু চিন্তায় পড়লো কারণ তার এবারের পরীক্ষা ততটাও ভালো হয়নি, পরীক্ষার রেজাল্ট বেড়ল। মহারাজ পঁচাশি শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তাই মা বেড়াতে যেতে রাজি হলেন কারণ, মহারাজ এর মা -এর ধারণা ছিল যে মহারাজ আরও কম নম্বর পাবে। শেষমেশ পঞ্চমীর দিন মহারাজ , তার বাবা এবং মা বেরিয়ে পড়ল ট্রেন ধরার জন্য। হাওড়া থেকে রাত বারোটায় ট্রেন। ওরা এগারোটার মধ্যেই পৌঁছে গেল হাওড়া স্টেশনে। তার পড়ে যাওয়ার পথে ট্রেনে মহারাজ মিডল সিটে বসলো। মোট সব মিলিয়ে বারো ঘন্টার জার্নি। সেদিন ট্রেনে উঠে তাড়াতাড়ি খেয়ে দেয়ে ওরা সবাই শুয়ে পড়লো। পরেরদিন সকালে মহারাজ উঠে মহারাজ জানালা খুলেই বরফে ঢাকা পাহাড় দেখল, আর তা দেখেই ওর মনও আনন্দে নেচে উঠলো। সকাল দশটায় ওরা সবাই ট্রেন থেকে নেমে হোটেল এর দিকে রওনা দিল। হোটেলে পোঁছে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে ওরা আশেপাশে ঘুরতে বেরোলো। কিছুক্ষন ঘুরে ওরা ওখানে একটা ভালো বাঙালী হোটেল দেখে সেখানে দুপুর বেলার খাবার এর অর্ডার দিয়ে এল। দুপুরে খেয়েদেয়ে খানিক্ষন হোটেলে বিশ্রাম করে ওরা একটা গাড়ি ভাড়া করে সাইড সিন করতে বেরলো। গাড়িটা হোটেল এরই একজন লোক ঠিক করে দিলেন। সেই লোকটির সঙ্গে মহারাজের খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেলো। ওরা যেখানে ছিলো সেখান থেকে তিস্তা নদী খুবই কাছে , তাই ওরা সবাই তিস্তা নদীর ধারেই গেল বেড়াতে। সে এক অপূর্ব জায়গা। সেখানে ওরা আনেক্ষন চুপচাপ বসে ছিল। শুধুমাত্র কিছু পাখির ডাক আর তিস্তা নদীর জলের কলকল শব্দ। সন্ধ্যে হতে ওরা আবার গাড়ি করে ফিরে এল হোটেলে। হোটেলে ফিরে রিসেপসন এ রাত্রের খাবার এর অর্ডারটা দিয়ে দিল। মহারাজ তো আনন্দে আত্মহারা। কারণ , মহারাজ এর আগে কখনো পাহাড়ে বেড়াতে আসেনি। রাত্রে বেলা খেয়েদেয়ে মহারাজ এর বাবা ঠিক করলো যে ওরা পরেরদিন সকাল বেলায় গ্যাংটক ঘুরতে যাবে। পরেরদিন সকাল বেলা হতে না হতেই মহারাজ ঘুম থেকে উঠে পড়লো। ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে চা বিস্কুট খেয়ে নিলো মহারাজ। এমনিতে মহারাজ খুব দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে , মানে যাকে ইংরেজি ভাষায় বলে - লেট রাইজার। কিন্তু ঘুরতে যাওয়া হবে শুনলেই মহারাজ এর ঘুম মাথায় উঠে যায়। চা-টা খেয়ে সেদিন খুব তাড়াতাড়ি স্নানও করে ফেললো মহারাজ। তার এই উৎসাহ দেখে বাবা তো হেসে অস্থির। মা বললেন যে যদি তুই এমনি সময়ে এত ভালো হতিস... এই বলেই তিনিও হাসতে শুরু করলেন। এসব দেখে মহারাজ একটু লজ্জাও পেলো বটে। ঠিক সেই সময়েই হোটেলের লোক এসে খবর দিলো যে তাদের জল -খাবার তৈরি এবং তাদের বেড়াতে নিয়ে যাবার জন্য গাড়িও চলে এসেছে। মহারাজ রা সবাই তৈরি হয়েই ছিলো। তাই সেই খবর শুনতেই তারা সবাই নিচে নেমে গেলেন। নিচে ডাইনিং রুমে গিয়ে জল - খাবার খেয়ে গাড়িতে চেপে গ্যাংটক বেড়াতে যাবার জন্য বেরিয়ে পরলেন। প্রায় তিন থেকে চার ঘণ্টা জার্নি করার পর তারা গ্যাংটক এ পৌঁছলেন। গ্যাংটক এর অপরূপ সুন্দর দৃশ্য দেখে ওরা সবাই মুগ্ধ হয়ে গেলো। তখন ওরা ঠিক করলো যে ওরা গ্যাংটক এ দুদিন থাকবে। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। তখনই তারা হোটেল দেখার জন্য ড্রাইভারকে বললেন। তখনই ওদের গাড়ির ড্রাইভার সেখানে একটা ভালো পাঁচ তারা হোটেল খুঁজে বের করে দিল। সেদিন দুপুরবেলায় ওরা সবাই বিরিয়ানি আর চিকেন চাপ খেলো। কারণ , সেদিন ঠিক ছিলো যে মহারাজ যা খেতে চাইবে তাই খাওয়া হবে। পুজোতে পাঁচ দিন মহারাজ এর ওপর কোন বাঁধন থাকে না। তাই সেই কটা দিন সে যা চাইবে তাই করতে পারবে। তার মানে অবশ্যই এ নয় যে মহারাজ যদি বদমাইশি করে , সেটাও মেনে নেওয়া হবে সেদিন বিকেলে ওরা তিনজনে গ্যাংটক শহর ঘুরতে বেরলো। মহারাজ এর মা কিছু কেনাকাটা করলো। মহারাজ ও তার বন্ধুদের জন্য কিছু কিনলো। তারপর ঘুরে- বেরিয়ে তারা যখন হোটেলে ফিরবে তখনই ঘটলো এক ভয়াবহ ঘটনা। তা দেখে সবাই চিৎকার করে উঠলো। চারিদিকে শোরগোল পড়ে গেলো। ভিড়ের মধ্যে একটি লোককে কেউ ছুড়ি মেরে চলে গেছে। আর লোকটি সেই ছুড়ির আঘাতে মারা গেছেন। ওখানে যতজন লোক ছিল সবাই এখন ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছে। লোকটিকে দেখে সম্ভ্রান্ত ঘরের বলেই মনে হচ্ছে। মহারাজ এর চোখের দৃষ্টি প্রখর হয়ে উঠেছে। তার চোখ এখন সেই লোকটিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ওই দৃশ্য দেখে মহারাজ এবং ওর বাবা - মা সবাই ওর হাত চেপে ধরলো। কিন্তু মহারাজ এর মন পড়ে থাকলো সেই ঘটনাস্থলে। ওদের হোটেল থেকে সেই জায়গাটা খুব দূরে নয়। তাই সন্ধ্যেবেলা মহারাজ ওর বাবা বা মা কাউকে না জানিয়েই সেই জায়গায় চলে গেলো। ততক্ষণে পুলিশ সেই গোটা জায়গাটা ঘিড়ে ফেলেছে। মহারাজ সেখানে গিয়ে একটু আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে লাগলো , কিন্তু পুলিশের তদন্তে কোন হস্তক্ষেপ করলো না। যে জায়গায় ঘটনাটা ঘটেছে তার পাশেই একটা জঙ্গল আছে। মহারাজ সেই জঙ্গলে গেল কিছু সূত্র পায় কিনা দেখার জন্য। জঙ্গলে গিয়ে মহারাজ দেখলো যে দুজন লোক নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। মহারাজ লুকিয়ে তাদের কথা শুনতে লাগলো। সে জানে অন্যদের কথা লুকিয়ে শোনা খারাপ , কিন্তু সে নিজেকে আটকাতে পারলো না। কেনই বা দুজন লোক এই রাত্রে বেলায় কি বা কথা বলছে ? তাদের কথা শুনে মহারাজ এর রক্ত হিম হয়ে গেল। ওই দুজন লোক নিজেদের মধ্যে সেই লোকটিকে হত্যা করা নিয়ে কথা বলছে। একজন বলল যে ও ব্যটা যদি বেঁচে থাকতো তাহলে তো আমাদের ব্যবসা লাটে উঠে যেত। তখন দ্বিতীয় লোকটি বলল চিন্তা করিস না আমি ওই শালাকে জন্মের মতো চুপ করিয়ে দিয়েছি। মানে ওই দ্বিতীয় লোকটি সেই ভদ্রলোকটিকে খুন করেছে। এবার ওইদিকে হোটেলে মহারাজকে খুঁজে না পেয়ে ওর বাবা - মা খুবই চিন্তায় পড়ে গেছে। হোটেলের একটি লোককে সঙ্গে নিয়ে ওর বাবা থানায় খবর দিতে গেলো। আর এদিকে মহারাজ এর মা কেঁদে পাগল হয়ে গেছে। ওদিকে মহারাজ ভাবলো যে সে তখনই গিয়ে পুলিশ অফিসারদের এই কথা গিয়ে বলে দি। কিন্তু এই কথা ভাবতে ভাবতেই ওই দুজন লোক মহারাজ কে দেখে ফেলেছে। তখন প্রথমজন বলল যে ওই দেখ চাঁদ একটা ছোকড়া আমাদের কথাগুলো শুনে ফেলেছে। তখন মহারাজ ভয়ে পাথর হয়ে গেছে। দ্বিতীয় লোকটি বলল তাহলে তো আর একে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। আর এই কথার যে কি মানে মহারাজ তা ভালো ভাবেই জানে। তখন সে ভয়ে পালাতে লাগলো , কিন্তু সেই লোকগুলো মহারাজ কে ধরে ফেলে। আর তারপরে তারা দুজনে মহারাজকে নিয়ে যায় তাদের গুপ্ত স্থানে। তাদের দুজনের নাম হোলো রূপচাঁদ আর রামলাল। মহারাজ কে একটা চেয়ার এর সঙ্গে তারা বেঁধে রাখলো, আর নিজেদের মধ্যে বলতে লাগলো যে কখন কীভাবে তারা মহারাজ কে শেষ করে দেবে। এই বলে তারা মহারজ এর দিকে একবার আড়চোখে তাকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। মহারাজ তখন প্রাণপণে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করছে। অনেক কষ্টে নিজেকে মুক্ত করে সে যখন পালাচ্ছে তখন সেই দুজন খুনি ফিরে আসছে। মহারাজ কে মুক্ত অবস্থায় পালাতে দেখেই তারা ওর পিছু ধাওয়া করলো। কিন্তু এবার তারা মহারাজ কে ধরতে পারেনি। সে অনেক ঘুরে সেই পুলিশ অফিসারদের কাছে পৌঁছে সব কথা বললে তখনই সেই পুলিশ অফিসার সদলবলে তাদের পাকড়াও করে। এবং মহারাজ কে তার মা - বাবার কাছে নিয়ে যায়। এদিকে তখন মহারাজকে দেখার জন্য লোক জড় হয়ে যায়। ওখানকার এসপি মহারাজকে চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানায়। কিন্তু মহারাজ সেদিন সাক্ষাৎ যমের দুয়োর থেকে ফিরে এসেছিলো। পরেরদিন কাগজে মহারাজ এর এই কীর্তির কথা প্রকাশিত হয়। সেবার আর মহারাজ দের ঘোরা হয়নি। সেদিন রাত্রের গাড়ি করেই তারা ফিরে আসে। আর মহারাজ কে কাছে ফিরে পেয়ে ওর মা আনন্দে কেঁদে যাচ্ছে আর ওর বাবার মুখে একটা স্মিত হাসি লেগে আছে। ©Pathik Majumder #City Gangtok
#City Gangtok
read more